স্বীকৃতি বিশ্বাস,যশোর :
তেমনি ঘুরে বেড়াচ্ছে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি গুলজার আহমেদ কর্তৃক দ্রুত সময়ের মধ্যে হিন্দু মন্দিরে হামলার ঘটনায় স্বপ্রোনোদিত হয়ে মামলা দায়ের করে দৃষ্টান্ত স্থাপনের বিষয়টি। শুধু তাই নয় বিচারপতি গুলজার আহমেদ সংখ্যা লঘু অধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশ প্রধান এবং উক্ত প্রদেশের মুখ্য সচিবকে ৪ জানুয়ারি/২০২১ এর মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দেন।
পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপের পর তৎপর হয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশ ১৪ জনকে গ্রেফতারও করে।
পাকিস্তানের মত সংবেদনশীল রাষ্ট্রে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করে প্রধান বিচারপতি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
যারা উস্কানি দিয়েছে এবং সরাসরি মন্দির ভেঙেছে তাদের অর্থে মন্দির পুনর্নির্মানের ব্যয় বহনের নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ।
এসময় মামলার শুনানিতে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেন,” ইভ্যাকুই প্রপার্টি ট্রাস্ট বোর্ড(ইপিটিবি)- কে মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করে দিতে হবে এবং সম্পূর্ণ খরচ আদায় করতে হবে প্রধান চক্রান্তকারী ও উস্কানিদাতা মৌলবি মহম্মদ শরীফের কাছ থেকে।
উল্লেখ্য,১৯৪৭ ভারত- পাকিস্তান ভাগ হওয়ার পরে ভারতে চলে যাওয়া হিন্দু ও শিখদের সম্পত্তি দেখা শুনার দায়িত্বে রয়েছে পাকিস্তান সরকারের ইপিটি বোর্ড।
পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতির ভাষ্য, খাইবার পাকতুনখোয়ার ঘটনা বিশ্বের দরবারে পাকিস্তানকে লজ্জিত করেছে।তাঁর নির্দেশ সমগ্র পাকিস্তানে পূজা বা উপাসনা হয় বা হয়না এমন যতো মন্দির বা গুরুদ্বার রয়েছে তার খতিয়ান তৈরি করে ইপিটিবি জমা দিতে হবে। যেখানে যতো মন্দির বা গুরুদ্বারের জমি বেদখল হয়েছে তা সব দখল মুক্ত করতে হবে।ঐসব জমিতে যারা ব্যবসা করে খাচ্ছে তাদের গ্রেফতার করতে হবে।এই মামলার চুড়ান্ত রায় প্রকাশিত হবে দুসপ্তাহ পর।
আজ পর্যন্ত মন্দির ভাঙচুরের ঘটনায় উস্কানিদাতা ও সরাসরি জড়িত ৯২ জনকে গ্রেফতার ও অত্র এলাকার পুলিশ সুপার ও ডেপুটি পুলিশ সুপারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
পাকিস্তানের মন্দিরে হামলার পর পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতির ভূমিকা ও তড়িৎ পদক্ষেপ সত্যি প্রশংসনীয়।
ভারত ভাগের আগে ও পরে শত শত বছর ধরে মুসলিম হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টানসহ নানা মত ও পথের লোক প্রতিবেশীর মতো বসবাস করে আসছে।শুধু বসবাসই নয় বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে একে অপরের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে চলছে এবং১৯৭১ সালে ধর্ম নিরাপক্ষ দেশ গঠনের জন্য সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের মধ্যে কি এমন ঘটলো যে একে অপরের ভ্রাতৃপ্রতিম প্রতিবেশীর উপাসনালয়সহ বাড়িঘর ভাংচুর করে উচ্ছেদের পায়তারা করা হচ্ছে।সঠিক কারণ খুঁজে বের করে সৃষ্ট বিষবৃক্ষ উৎপাটনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এসেছে কিনা তা ভেবে দেখার সময় এসেছে।
পাকিস্তানের মতো সংবেদনশীল দেশ যদি এতো তড়িৎ পদক্ষেপ নিতে পারে তাহলে আমাদের বাংলাদেশে কেন সম্ভব নয়?
আপনার মতামত লিখুন :