মিজানুর রহমান বসুন্দিয়া, যশোর।
সন্ধ্যায় খবর এলো যশোর খুলনা বাস চালু হয়নি তবে স্কুটার চালু হইছে।ভেঙে ভেঙে মনুষ যাতায়াত শুরু করেছে।আমাকে কাল ফিরতে হবে। ফিরতে পারবো শুনে বাড়ির জন্য মন আনচান করে উঠলো।মা কেমন আছে, বন্ধুরা কে কেমন আছে?সবার কথা ভেবে মন উতালা হয়ে উঠলো এবং কোন রকমে এপাশ-ওপাশ করে রাত পার হলো।
সকাল ৮/৯ টায় বাড়ি থেকে বের হলাম।দলে দলে অনেক মানুষ গ্রাম থেকে ফিরছে।সবারই গন্তব্য শহর।সবারই মন ভার অজানা আশংকায়।কি পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে শহরে গিয়ে, যা ফেলে পালিয়েছিল ফিরে গিয়ে সে সব ঠিক মত পাবে কি না এই সংশয়।
নদীর ঘাটের যত কাছাকাছি যাচ্ছি ততই কি একটা উৎকট গন্ধ নাকে আসতে লাগলো। রাস্তার পাশে একটা লেবু ক্ষেত ছিল। অনেকে গন্ধ তাড়াতে সেই লেবুর পাতা তুলে নাকে ধরল, কেউ নাকে কাপড় বাধলো।আমরাও পাতা তুললাম, নাকে কাপড় চেপে ঘাটের দিকে এগোতে থাকলাম।
আমরা যখন ঘাটে পৌছালাম তখন সবার চোখ ছানাবড়া। নদীতে অসংখ্যা লাশ ভাসছে, কিছু লাশ চরে আটকে আছে। সে গুলোই পচে গন্ধ ছড়াচ্ছে। দুই তিন জন লোক লাশ ঠেলে নদীতে ভাসিয়ে দিচ্ছে। কুকুর শেয়ালে টানাটানি করছে একটা লাশ।কোন লাশের পরনে খাকি পোষাক কোনটা সাধারণ পোষাকে।
হৃদয় বিদারক এ দৃশ্য দেখে কেউ কেউ বমি করতে শুরু করল।যতদুর মনে পড়ছে দুজন জ্ঞান হারিয়েছিল।
কেউ কেউ কান্না থামাতে না পেরে হাউমাউ করে কাদতে নাগলো।কেউ কেউ ইয়াহিয়া খানের ১৪ গোষ্ঠি উদ্ধার করতে লাগলো। (চলবে)
আপনার মতামত লিখুন :