নৌকা ছেড়ে যাবার পর বেকার হয়ে গেলাম, মনটা বিষন্ন হয়ে গেল, এক শহরের যোদ্ধাদের কথা ভেবে দুই মার অসুস্থতার জন্য। মন খারাপ করে বসে আছি আর ভাবছি বাড়ী ফেরার কথা কিন্তু কি করে ফিরব লঞ্চ বন্ধ, পকেটে টাকা নেই, আপা দুলাভাইকে বললে কোন মতেই টাকা দিতে রাজি হবেনা এমন কি যেতেও দিবেনা। হঠাৎ মাথায় এলো পালিয়ে যাব, যারা রসদের নৌকা নিয়ে যাচ্ছে ওদের বলে কয়ে ওই নৌকায় উঠবো , যে ভাবনা সেই কাজ। বাড়ি গিয়ে দেখি আপা রান্না ঘরে দুলাভাই বাড়িতে নেই, মোক্ষম সুযোগ। প্যান্ট জামা গুটিয়ে পুটলা করলাম, আপার তহবিল হাতড়িয়ে ৪/৫ টাকা মত পেলাম, ব্যাস নিয়েই দৌড়, হিসাব সোজা, মধুমতি নদীর কুল ধরে হাটো- নৌকা পাবই।
কখনো দৌড়ে,কখনো হেটে অনুমানিক তিন চার মাইল এসে নৌকার দেখা পেলাম।আমি ওদের বললাম আমাকে তুলে নিতে।কিন্তু ওরা অপারগতা প্রকাশ করল আর বললো দৌড়ে সামনে যাও,আর্মি সাহেবের নৌকা সামনে উনার নৌকায় জায়গা আছে। শুরু হলো আবার দৌড়। ডান হাতে প্রমত্ত মধুমতি বাম হাতে ধু ধু মাঠ, মাঠ ভরা ছোলা আর ছোলা, কোনটা পাকা কোনটা কাচা, আধা পাকা দেখে কিছু গাছ তুলে নিলাম।
হাটবার সময় খাচ্ছি, এতে একদিকে ক্ষুধা নিবারণ হচ্ছে অপর দিকে দৌড়ানোর ক্লান্তি দুর হচ্ছে। কতটা দৌড়েছি এবার বলতে পারবো না কারণ পথে কারো সঙ্গে দেখা হয়নি তাই জানা হয়নি।
এবার দেখি নতুন বিপদ, পেলাম একটা ত্রিমোহনী, পারের কোন ব্যবস্হা নেই, কি করব বুঝতে পারছিনা।হাতে সময়ও কম, হাটা শুরু করলাম শাখা নদীর কুল ধরে, সামান্য হেটেই পেয়ে গেলাম খেয়া। পার হয়ে আবার দৌড়, ফের মধুমতি ধরে সামান্য এগোতেই নৌকার দেখা পেলাম, তুলে নিতে বললাম, উনারা বললেন সামনে বাজার, বাজারে যাও ঐখান থেকে তুলে নেবো।
(চলবে)
আপনার মতামত লিখুন :